জয়নাল আবেদীন,বেনাপোল থেকে: পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। যার ফলে গেল অর্থবছরে (২০২২-২৩) বেনাপোল বন্দর দিয়ে আগের সব রেকর্ড ভেঙে ভারত-বাংলাদেশে ২১ লাখ ২৯ হাজার ৬৯৩ জন পাসপোর্ট-ধারী যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এতে করে সরকারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে না ওঠায় দুর্ভোগ কাটেনি যাত্রীদের। আর বন্দর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন অবকাঠামো নির্মাণের।
পদ্মা সেতুর কল্যাণে ঢাকা থেকে বেনাপোল বন্দরের দূরত্ব কমায় এ রুটে যাত্রী পারাপার বেড়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মালবাহী ট্রাককে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদীপাড়ে অপেক্ষা করতে হয় না। ফলে বেড়েছে বাণিজ্যিক সুবিধাও।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, গত বছর দেশে উন্নয়ন খাতে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তার মধ্যে পদ্মা সেতু ছিল সবচেয়ে আলোচিত। সেতুর কল্যাণে ঢাকা থেকে বেনাপোল বন্দরের দূরত্ব কমেছে ৭১ কিলোমিটার। এটি শুধু বাণিজ্যকে সহজ করেনি, এ পথে ভারত-বাংলাদেশে যাতায়াতকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ কমিয়েছে। এখন ঢাকা থেকে মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টায় বেনাপোলে পৌঁছানো যাচ্ছে। যাতায়াত সুবিধা ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অন্য বন্দর বা আকাশপথ ব্যবহারকারীরা এখন বেনাপোল রুট ব্যবহার করছেন।
ভারত থেকে ফেরত আসা যাত্রী জেসমিন বলেন, পদ্মা সেতুতে যাত্রা সহজ হয়েছে। তবে বেনাপোল বন্দরের আগের ভোগান্তি রয়ে গেছে। বন্দরে যাত্রী নিরাপত্তা ও সুবিধা বাড়াতে হবে।
ভারত-গামী পাসপোর্ট-ধারী যাত্রী আমির হোসেন জানান, বর্তমানে ভারত ভ্রমণে শিশুদের ৫০০ টাকা ও প্রাপ্তবয়স্কদের হাজার টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স এবং বন্দর ট্যাক্স বাবদ ৫২ টাকা পরিশোধ করতে হয়। অথচ প্রতিশ্রুত কোনো সেবা নেই। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন জানান, পদ্মা সেতু যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করে দিয়েছে। সময় কম ও সাশ্রয়ের জন্য যাত্রীরা এখন বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করছে বেশি। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। গত অর্থবছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে যাত্রী-ছাউনির জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে জানিয়ে বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, পদ্মা সেতুর কল্যাণে গেল অর্থবছর শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২১ লাখ ২৯ হাজার ৬৯৩ জন পাসপোর্ট-ধারী যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১০ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৪ জন। আর ভারত থেকে দেশে এসেছেন ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৮ জন। ২০২১-২২ অর্থবছরের যাতায়াত করেন ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫৯৮ জন। ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে যাত্রী বেড়েছে ১৫ লাখ ৭১ হাজার ১০১ জন।